ঢাকা , শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসি

আপলোড সময় : ২৫-০৪-২০২৪ ১০:৩৪:১৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ২৫-০৪-২০২৪ ১০:৩৪:১৫ পূর্বাহ্ন
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসি সংগৃহীত
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বয়ং নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেননা, এবারের উপজেলা নির্বাচনে বেশির ভাগ বড় বড় রাজনৈতিক দল দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে ২৭টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল, সেই দলগুলোর অনেকেই উপজেলার ভোটে নেই। যারা বর্তমানে প্রার্থী, তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত। 

মূলত ভোট হচ্ছে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর। এই পরিস্থিতিতে ভিন্নমতের ভোটারদের কেন্দ্রে আনা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন ইসির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আইনশৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসন, বিশেষ করে সব জেলার ডিসি-এসপিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকলেও দলীয়ভাবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু দেখা গেছে, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে স্থানীয়ভাবে অনেক এমপির আত্মীয়স্বজন প্রার্থী হয়েছেন।

এবার যারা তিনটি পদে প্রার্থী হয়েছেন, তার সিংহভাগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমনকি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন, কংগ্রেস ভোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এছাড়া জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ভোটে থাকলেও দলগুলোর মধ্যে গা-ছাড়া ভাব লক্ষণীয়। 

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ভোটে ভোটারদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত ন্যূনতম কোনো উত্সাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়নি। বরং এবার উপজেলার ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৫টি পদে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। চারটি উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সব কয়টি পদে একক প্রার্থী। 

অর্থাৎ, ঐ চার উপজেলায় ভিন্নমতের কেউ প্রার্থী হতে সাহস করেননি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাপনায় ভোটারদের অনাস্থা ও অনাগ্রহ তৈরি হয়। এরপর অনুষ্ঠিত উপজেলা ভোটে ব্যাপক অনিয়ম ছড়িয়ে পড়ে।

তারপর পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিগত ৭ জানুয়ারি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বর্জনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ ভোটের প্রদত্ত হার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে শেষ এক ঘণ্টায় অস্বাভাবিক ভোট দেখানো নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ইসিকে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে। ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ভোট হবে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ মে।

আর ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে। চার ধাপের ভোটের তপসিল ঘোষণা করা হলেও নির্বাচন অনেকটাই নিরুত্তাপে পরিণত হয়েছে। দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত উপজেলা ভোট নির্দলীয় রূপে চলে গেছে। উপজেলা নির্বাচন এখনো জমে ওঠেনি। ভোটাররা অনেকটাই আগ্রহী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইসির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে। এমনিতেই গরমের মধ্যে এবারের ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে ভোটে কোনো রাজনৈতিক ফ্লেবার নেই। প্রার্থী ছাড়া ভোটারদের মধ্যে কোনো উদ্দীপনাও নেই।

সব জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের যথাসময়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। ২৫ এপ্রিলের বৈঠকের বিষয়ে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারদের উপস্থিতিতে আগামী ২৫ এপ্রিল বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। নির্দেশনাটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, সব বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, সব ডিসি ও এসপিদের পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Monir Hossain

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ